আবদুর রহমান জাহাঙ্গীর
কবিরহাট (নোয়াখালী)
নোয়াখালীর কবিরহাটের ৭নং বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় থেকে উধাও হওয়া রিলিফের (ভিজিএফ) সেই ৪০ বস্তা চাল ১৮ দিনেও উদ্ধার হয়নি। তবে কারাগারে থাকা গ্রাম পুলিশ মো. হারুনুর রশিদকে রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন শাহীনের কাছে জবাব চেয়ে ‘শোকজপত্র’ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিসকাতুল তামান্নাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) কর্মসূচির আওতায় গত ২২ এপ্রিল কবিরহাট উপজেলার ৭নং বাটইয়া ইউনিয়নের অনুকূলে ২১ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেদিন গ্রাম পুলিশ হারুনের নেতৃত্বে চাল উত্তোলন করে পরিষদে জমা দেওয়া হয়। এরপর চাল বিতরণের আগে ২৫ এপ্রিল দুই টন চাল কম রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ২৭ এপ্রিল ইউপি সচিব আবদুল কাইয়ুমের করা মামলায় গ্রামপুলিশ হারুনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান ।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন শাহীনের যোগসাজশে তার লোকজন পাহারাদারকে দিয়ে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের চাল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সরিয়ে নিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে পাহারাদারের ওপর দোষ চাপিয়ে তারা বাঁচতে চাচ্ছেন।
হারুনের পরিবারের দাবি, চাল বুঝিয়ে দেওয়ার পর বিতরণ করে এখন অন্যায়ভাবে নিজেদের দোষ ঢাকতে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবিও জানান তারা।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, চুরি হওয়া চাল উদ্ধারে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েও এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। এদিকে গ্রেফতার গ্রামপুলিশ হারুনের এক সপ্তাহের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে পেলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতিকুল মামুন বলেন, চিঠি দিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন শাহীনের দাবি, তাকে ফাঁসাতে প্রতিপক্ষের লোকজন এমন অভিযোগ ছড়াচ্ছেন। উধাও হওয়া চালের পরিবর্তে সমপরিমাণ চাল তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কিনে বিতরণ করেছেন।
উল্লেখ ১৮ দিন আগের সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আজও একই ইউনিয়নের ৪ বস্তা / ২০০ কেজি ১০ টাকা দামের চাল পাচারের সময় জনতা হাতেনাতে এক অটো চালককে আটক করে, পরে ঐ ঘটনায় ডিলার হাফিজ উল্লাহ ও আটো চালক দেলোয়ার হোসেন কে গ্রেফতার করে কবিরহাট থানা পুলিশ।