আবদুর রহমান জাহাঙ্গীর
কবিরহাট (নোয়াখালী)
নোয়াখালী কবিরহাট উপজেলার ৭ নং বাটইয়া ইউনিয়নে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা মূল্যের মাসে ৩০ কেজি চাউল বিতরণে অনিয়ম করে খোলা বাজারে বিক্রির সময় ২শত কেজি চাউল জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ডিলারসহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিকেলে এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে, সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে স্থানীয় কাচারিরহাট বাজার এর পূর্ব পাশে এনামুল হকের দোকান সংলগ্ন স্থান থেকে রিকশাসহ চালগুলো জব্দ করা হয়।
পরে স্থানীয়রা কবিরহাট থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটককৃত লোক ও চাউল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। আটককৃতরা হচ্ছেন, চালের ডিলার হাফিজ উল্ল্যাহ ও অটোরিকশা চালক মো: দেলোয়ার হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, বাটইয়া ইউনিয়নে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসুচি বাস্তবায়নের জন্য নিযুক্ত ডিলার হাফিজ উল্যা (শেখ সাব) ভোর ৬টার দিকে তার দোকান (গুদাম) থেকে পার্শ্ববর্তী ইলিয়াছ কন্ট্রাক্টরের বাড়িতে অটোরিকশাযোগে ৪বস্তা চাউল পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভাড়া করে। চাউল নিয়ে যাওয়ার পথে স্থানীয়রা রিকশা চালকসহ চাউল গুলো আটক করে।
যার বাড়িতে চাউল যাচ্ছে সেই ইলিয়াছ কন্ট্রাক্টর জানান, আজ থেকে ২/৩দিন আগে ডিলার হাফিজ উল্যা তাকে বলেছেন কিছু চাউল আছে যা তাকে ক্রয় করার জন্য প্রস্তাব দেন। পরে তিনি কত টাকা দিতে হবে জিজ্ঞেস করায় হাফিজ উল্যা বলেছেন ১হাজার টাকা দিতে হবে। এরই পেক্ষিতে ভোরে অটোরিকশাযোগে তার বাড়িতে চাউল পাঠিয়েছে বলে ভোর ৬টার দিকে ডিলার হাফিজ উল্যা তাকে মোবাইলে কল করে জানিয়েছেন। তার কিছুক্ষন পরে তিনি জানতে পারেন এটি সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাউল। তাই পথে স্থানীয়রা আটক করেছেন।
কবিরহাট উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সালা উদ্দিন জানান, এই ডিলারের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক গুলো অভিযোগ ছিল। প্রমানের অভাবে প্রতিবারই পার পেয়ে যেত সে। এঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে ডিলারসহ ২জনকে আটক করা হয়েছে।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৫ এপ্রিল সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে বাটইয়া ইউনিয়নের দুস্থদের জন্য পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারের বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচির ৪২০ বস্তা চাল উত্তোলন করা হয়। রাতে চালের বস্তাগুলো ইউপি কার্যালয়ে রাখা হয়। পরদিন দুস্থদের মাঝে চাল বিতরণের সময় বস্তা কম দেখে সন্দেহ হলে গণনা করে ৪০বস্তা চাল কম পাওয়া যায়। পরে গ্রাম পুলিশ হারুনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো উদ্ধার হয়নি ভি জি এফ এর সেই ৪০ বস্তা চাল।