মোহাম্মদ হাসানঃ- অবশেষে চট্টগ্রাম জেল থেকে পালানোর চার দিনের মাথায় মঙ্গলবার সকালে রায়পুর থানার আদিয়াবাদ শেরপুর কান্দাপাড়া চরাঞ্চল এলাকায় ফুফুর বাসা থেকে হাজতি ফরহাদ হোসেন রুবেলকে গ্রেপ্তার করেন কোতোয়ালী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে চট্টগ্রামে আনা হয়। জানাযায়, কারাগারের দেয়াল টপকে নয়; নির্মাণাধীন চার তলার ভবন থেকেই লাফ দিয়ে পালিয়েছেন খুনের মামলায় কারাবন্দি ফরহাদ হোসেন রুবেল। যদিও গতকাল সোমবার কারা কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি পলাতক হাজতি ফরহাদ হোসেন রুবেল দেয়াল টপকে পালানোর কথা বলেছিলেন। চারতলা থেকে লাফ দিয়ে প্রথমে কারা অভ্যন্তরের ২২ ফুট উচ্চতার দেয়ালটির বাইরে পড়েন তিনি। এরপর সেখান থেকে কারাগারের আরেকটি ১০ ফুট উচ্চতার দেয়াল অনায়াসেই টপকে পালিয়ে নরসিংদী চলে যান। ৯ মার্চ মঙ্গলবার সকালে রায়পুর থানার আদিয়াবাদ শেরপুর কান্দাপাড়া চরাঞ্চল এলাকায় ফুফুর বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে চট্টগ্রামে আনা হয়। তাকে প্রথমেই নিয়ে যাওয়া হয় সিএমপির উপ-কমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৪টা ২০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার ভাঙা পায়ে প্ল্যাস্টার করার পর সন্ধ্যায় কোতোয়ালী থানায় মিডিয়ার সামনে হাজির করা হয়। কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন সংবাদ মাধ্যমে জানান, ৬ মার্চ নিয়মিত হাজতি গণনার সময় রুবেল ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে কর্ণফুলী ভবনের ৫ম তলার ১৫ নম্বর কক্ষ থেকে বের হন। সেখান থেকে ভবনের মূল গেট খোলা থাকার সুযোগে বের হয়ে যান। বের হয়েই মাঠে থাকা পানির ট্যাংক থেকে পানি নিয়ে মুখে পানি দেন। এরপর কারাগারের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ফাঁসির মঞ্চের পাশ দিয়ে নির্মাণাধীন চালতলা ভবনের দিকে যান। সেই ভবনটির মূল দরজা বন্ধ থাকায় জানালার গ্রিল ধরে চারতলার ছাদে ওঠেন। সেখান থেকে ৫টা ২৯ মিনিটে ব্যান্ডেল রোডের মা ভবনের পাশ দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব কোণায় চারতলার ছাদ থেকে লাফ দেন রুবেল। ওই ভবন থেকে কারাগারের প্রধান দেয়ালের দূরত্ব ২২ ফুট। লাফ দেয়ার সময় তিনি ওই ২২ ফুট দূরত্ব নিমিষেই টপকে যান। প্রধান সীমানা দেয়ালের পর কারাগারের আরেকটি প্রাথমিক দেয়াল রয়েছে সেখানের ভেতরে কোণায় একটি নিরাপত্তী চৌকি রয়েছে। ওই দেয়ালের উচ্চতা অন্তত ১০ ফুট এবং তার ওপর কাঁটা তারের বেঁড়াও রয়েছে। ২২ ফুট উচ্চতার মূল দেয়াল থেকে ১০ ফুট উচ্চতার দেয়ালের দূরত্বও অন্তত ১৮ ফুট, তিনি চার তলা থেকে ঠিক ওই স্থানের মাঝ বরাবর পড়েন। এরপর কাঁটাতারের দেয়ালটির ফাঁক গলে টপকে যান। জানাগেছে জেল পলাতক রুবেল চট্টগ্রাম থেকে বাসে করে ওই দিনই নরসিংদীর রায়পুর থানার আদিয়াবাদ শেরপুর কান্দাপাড়া চরাঞ্চল এলাকায় ফুফুর বাসায় অবস্থান নেন। মূলত চার তলা থেকে লাফ দেয়ায় তার পা ও কোমরে আঘাত পান। সেখানে তিনি এলাকায় গিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে হেঁটে ফুফুর বাসায় যান। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মনে সন্দেহ হলে আর কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার খবর গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হলে তাদের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে সেই খবর পৌঁছে যায় কোতোয়ালী থানা পুলিশের কাছে। তারাও স্থানীয়ভাবে সোর্স নিয়োগ করে তাকে নজরবন্দি করেন ওই দিনই। পরে নিশ্চিত হয়েই রায়পুরা থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তারে সোমবার দুপুরের দিকে কোতোয়ালী থানার একটি টিম নরসিংদী রওনা দেয়। অবশেষে মঙ্গলবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামে আনে